Thursday, April 20, 2023

১০০ বছর পর ২০এপ্রিল ২০২৩ তারিখ বৃহস্পতিবার বিরলতম সূর্য গ্রহণ

১০০ বছর পর ২০এপ্রিল ২০২৩ তারিখ বৃহস্পতিবার বিরলতম সূর্য গ্রহণ

 



১০০ বছর পর ২০এপ্রিল বিরলতম সূর্য গ্রহণ ২০ শে এপ্রিল বৃহস্পতিবার সংঘটিত হতে যাচ্ছে এই বিরল সূর্যগ্রহণ । এই সূর্যগ্রহণ টি হবে পুর্নগ্রাস সূর্যগ্রহণ,অর্থ্যাৎ সূর্যগ্রহণ চলাকালীন সময়ে চাঁদ সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে নিবে। একই সময়ে তিন ধরনের গ্রহণ দেখা যাবে বলে একে শংকর সূর্যগ্রহণ বলা হয়। ১০০ বছর পর বিরলতম সূর্যগ্রহণটি আবার ঘটতে চলেছে।

এই সূর্যগ্রহণ কে হাইব্রিড বা শংকর সূর্যগ্রহণ বলে অ্যাখ্যায়িত করেছেন। কারণ এদিন একই সঙ্গে তিন ধরনের গ্রহণ দেখা যাবে। এই সূর্যগ্রহণকে Ningalu Solar Eclipse-ও বলা হয়ে থাকে।আসুন জেনে নিই, শংকর সূর্যগ্রহণ কী?

যখন তিন ধরনের সূর্যগ্রহণ- আংশিক গ্রহন,পূর্ণগ্রাস এবং বলয়গ্রাস গ্রহণ দেখা যায়, তখন তাকে শঙ্কর গ্রহণ বলে। এই ধরনের গ্রহণ অত্যন্ত বিরল। শঙ্কর সূর্যগ্রহণ ১০০ বছরে একবার দেখা যাবে। এই তিন ধরনের গ্রহণ হলো…

আংশিক সূর্যগ্রহণ

আংশিক সূর্যগ্রহণ, যখন চাঁদ এমনভাবে সূর্যের সামনে দিয়ে যায় যাতে সূর্যের কিছু অংশ চাঁদের ছায়ায় ঢেকে যায় তখন তাকে আংশিক সূর্যগ্রহণ বলে।

বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ

যবলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ, খন চাঁদ এমন দূরত্বে চলে যায় যে এটি সূর্যের ঠিক মাঝখানে থাকে, তখন চাঁদের ছায়া সূর্যের উপর এমনভাবে পড়ে যে সূর্যকে পৃথিবী থেকে আগুনের বলয়ের মতো দেখায়, একে বৃত্তাকার গ্রহণ বলে।

পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ

পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ, সূর্য এবং চাঁদ যখন সম্পূর্ণ সরলরেখায় থাকে, তখন সূর্য পৃথিবীর কিছু অংশে সম্পূর্ণরূপে আবৃত থাকে। পৃথিবীর এই সমস্ত অঞ্চলে দিনের বেলায় রাতের মতো অন্ধকার হয় । একে পূর্ণ সূর্যগ্রহণ বলা হয়।

সূর্যগ্রহণের সময়

সূর্যগ্রহণের সময়, আগামী ২০ এপ্রিল ২০২৩ বৃহস্পতিবার হবে এই বছরের প্রথম সূর্যগ্রহণ। সূর্যগ্রহণ ২০২৩। ১০০ বছর পর ২০এপ্রিল বিরলতম সূর্য গ্রহণ, বাংলাদেশ সময় অনুসারে সকাল ৭টা ৩৪ মিনিটে গ্রহণ লাগবে এবং গ্রহণ ছেড়ে যাবে বেলা ১২টা ৫৯ মিনিটে। মোট ৫ ঘণ্টা ২৪ মিনিট ধরে চলবে সূর্যগ্রহণ।

সূর্যগ্রহণের সময় সূর্যগ্রহণ টি বাংলাদেশ সময় সকাল ৭ টা বেজে ৩৪ মিনিটে শুরু হবে।
বাংলাদেশ সময় সকাল ৮ টা বেজে ৩৭ মিনিটে পূর্ণগ্রাস গ্রহন শুরু হবে।
পূর্ণগ্রাস গ্রহণ শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকাল ১০ টা বেজে ১৬ মিনিটে এবং শেষ হবে দুপুর ১১ টা বেজে ৫৬ মিনিটে।
পুরোপুরি শেষ হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২ টা বেজে ৫৯ মিনিটে।

২০২৩ সালে মহাকাশ নিয়ে কৌতূহল

২০২৩ সালে মহাকাশ নিয়ে কৌতূহল লোকদের জন্য দুর্দান্ত চমক রয়েছে। মহাজাগতিক ঘটনা যেমন উল্কাপাত, চন্দ্রগ্রহণ এবং সুপার মুন সারা বছর জুড়ে ঘটবে। প্রায় প্রতি বছর ১২টি পূর্ণিমা হয়। তবে এবার দেখা যাবে ১৩টি। এর মধ্যে দুটি হবে আগস্টে। দ্বিতীয় পূর্ণিমা একটি নীল চাঁদ হবে।

গড়ে প্রতি আড়াই বছরে একটি নীল চাঁদ দেখা যায়। ২০২৩ সালে মহাকাশ নিয়ে কৌতূহল, স্পেস অবজারভেটরি আর্থস্কাই আগস্টের পূর্ণিমাকে সুপারমুন বলে অভিহিত করেছে। তবে সুপারমুনের সংজ্ঞা ভিন্ন। পূর্ণিমায়, চাঁদ যখন উজ্জ্বল এবং পৃথিবীর কাছাকাছি থাকে, তখন এটি একটি সুপারমুন। সেই হিসাবে, জুলাইয়ের চাঁদকে সুপারমুন হিসাবেও বিবেচনা করা যেতে পারে।

ইতিমধ্যে, পৃথিবী ২০২৩ সালে দুটি সূর্যগ্রহণ এবং দুটি চন্দ্রগ্রহণের সাক্ষী হবে৷ ২০২৩ সালে মহাকাশ নিয়ে কৌতূহল, ২০এপ্রিল একটি সূর্যগ্রহণ ঘটবে এবং অপরটি পশ্চিম গোলার্ধে সূর্যগ্রহণ ১৪ অক্টোবর হবে। এই ঘটনাটি উত্তর, মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকা থেকে দেখা যাবে। অন্যদিকে চন্দ্রগ্রহণ হবে ৫ মে এবং ২৮ অক্টোবর। প্রথমটি আফ্রিকা, এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়া থেকে দেখা যাবে। দ্বিতীয়টি ইউরোপ, এশিয়া এবং আমেরিকার কিছু অংশে দেখা যায়।

২০২৩ সালে মোট বারোটি উল্কাবৃষ্টি হবে। প্রথম পর্বটি ৩ এবং ৪ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দ্বিতীয়টি এপ্রিল মাসে। এরপর পরপর জুলাইয়ে দুটি, আগস্টে একটি, অক্টোবরে একটি এবং নভেম্বরে দুটি উল্কাপাত হবে। কিন্তু এসব অপরূপ দৃশ্য দেখতে হলে আপনাকে শহুরে আলোক দূষণমুক্ত জায়গায় দাঁড়াতে হবে। সূর্যগ্রহণ ২০২৩। ১০০ বছর পর ২০এপ্রিল বিরলতম সূর্য গ্রহণ, একটি প্রশস্ত মাঠ বা খোলা জায়গায় যান এবং সোজা উপরে দেখুন। চোখের অন্ধকারের সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য ২০-৩০ মিনিট। কোন ফোন ছাড়া থাকতে হবে,তারপর আছে চমক।

বছরের প্রথম সূর্যগ্রহণ ২০ এপ্রিল

বছরের প্রথম সূর্যগ্রহণ ২০ এপ্রিল ১৫০ বছরের মধ্যে দীর্ঘতম সূর্যগ্রহণ, যার অর্থ হল সূর্যগ্রহণ যে স্থানে ঘটবে সেখানে কিছু সময়ের জন্য সূর্য এবং চাঁদের ছায়া থাকবে। তবে বাংলাদেশ ও ভারত থেকে এই গ্রহন দেখা যাবে না। সূর্যগ্রহণ ২০২৩। ১০০ বছর পর ২০এপ্রিল বিরলতম সূর্য গ্রহণ, এই সূর্যগ্রহণ কম্বোডিয়া, চীন, আমেরিকা, মাইক্রোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিজি, জাপান, সামোয়া, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ, ব্রুনাই, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, অ্যান্টার্কটিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, পাপুয়া নিউ গিনি, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, দক্ষিণ ভারত মহাসাগর অন্তর্ভুক্ত করে অঞ্চল, দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের বিস্তৃত এলাকা থেকে দেখা যাবে।

বাংলাদেশে সূর্যগ্রহণ

বাংলাদেশ সূর্যগ্রহণ, বাংলাদেশ থেকে যেহেতু গ্রহণ টি দেখা যাবে না, তাই বাংলাদেশের মানুষের এ নিয়ে ভাবার কোনো কারণ নেই । সূর্যগ্রহণ ২০২৩। ১০০ বছর পর ২০এপ্রিল বিরলতম সূর্য গ্রহণ। ২০৩০ সালে বাংলাদেশ থেকে একটি আংশিক সূর্যগ্রহণ দৃশ্যমান হবে। তবে,এই শতাব্দীতে বাংলাদেশ থেকে কোনো পুরোপুরি সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে না,শুধুমাত্র আংশিক দেখা যাবে।

 

আর ধর্মীয় বিষয়গুলো মাথায় রাখলে এ সময় বেশি বেশি নফল নামাজ পড়বেন। কোনো কুসংস্কারে কান দেবেন না।

 

 

সন্দ্বীপের সবুজ চর

সন্দ্বীপের সবুজ চর

 সবুজ চর নামেই সবার কাছে পরিচিত এ চরটি। সন্দ্বীপের উত্তরে বামনী নদী ও পশ্চিমে মেঘনা নদীর মোহনাঘেঁষে আমানউলস্না, সন্তোষপুর, দীর্ঘাপাড়-তিনটি ইউনিয়নজুড়ে বিস্তৃত এ চর। উপকূলীয় বেড়িবাঁধের পর যতদূর চোখ যায় বিস্তীর্ণ চর। ছয়টি ঋতুতে ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন রূপ নিলেও মূলত শীত ও বর্ষা দুই ঋতুতে সবুজ চর হাজির হয় তার সব সৌন্দর্য নিয়ে।



বর্ষায় নদীতে পানির উচ্চতা বেড়ে গেলে জোয়ারের পানিতে পস্নাবিত হয় চর। বিস্তীর্ণ চরজুড়ে তখন চাষ হয় রাজাশাইল ধান। প্রত্যেক জমির আল কেটে বসানো হয় মাছ ধরার চাঁই। জোয়ারের পানির সঙ্গে নদী থেকে উঠে আসে টেংরা, চিড়িং, কোরাল, কাঁকড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। ভাটার সময় পানি নেমে গেলে চাঁইয়ের ভেতর আটকা পড়ে মাছগুলো। শত শত চাঁই বসানো থাকে জমিগুলোতে। যেন ধান আর মাছ নিয়ে প্রাকৃতিক সমন্বিত চাষাবাদ। কয়েকটা জমি পরপর মাটি থেকে চার-পাঁচ ফুট উঁচুতে ছাউনি দেয়া মাচার মতো ঘর বানানো থাকে। সেখানেই রাত জেগে মাছ ধরে, চাঁই পাহারা দেয় স্থানীয় লোকজন।

কিছু কিছু জায়গায় দেখা যায় বড় বড় জলাশয়। সেখানে ফুটে থাকে রাশি রাশি শাপলা। শখের বসে শাপলা তোলে গ্রামের মেয়েরা। কেউ খোঁপায় গোঁজে, কেউ বিক্রি করে স্থানীয় বাজারে। জোয়ারের সময় গরু নিয়ে ঘরে ফিরতে দেখা যায় এসব বালিকাদের কাউকে কাউকে।

শীতকালে সম্পূর্ণ ভিন্ন রূপ নিয়ে হাজির হয় সবুজ চর। বর্ষাকালের জল থই থই চরটাকে যেন আর চেনা যায় না তখন। শরতের শুরুতে আকাশে ভেসে বেড়ায় বাউন্ডুলে মেঘ। সবুজ চর থেকে সন্ধ্যার আকাশ দেখার এটাই উপযুক্ত সময়। সূর্য ডোবার পর আকাশের খোলা ক্যানভাসে নানান রঙে ছবি আঁকে প্রকৃতি। আকাশ পরিষ্কার থাকায় সন্দ্বীপের উত্তরে চরের শেষ প্রপ্রন্ত দাঁড়ালে পূর্বদিকে দেখা যায় চট্টগ্রামের পাহাড় আর উত্তরে নোয়াখালী। বেড়িবাঁধের উপরে এসে দাঁড়ালে চরের মাঝখানে বিচ্ছন্ন দ্বীপের মতো ছাড়া ছাড়া কতগুলো বাড়ি চোখে পড়ে। সন্ধ্যা নামলে ওসব বাড়ির ভেতর মিট মিট আলো জ্বলে। একবার মনে হয় তারা, একবার মনে হয় জোনাকি।

হেমন্তে ধান কাটা শেষ হলে বিপুল বিরহ নিয়ে শূন্য পড়ে থাকে মাইলের পর মাইল। এ সময় বিস্তীর্ণ চরজুড়ে কোনো ফসল না থাকায় ছেড়ে দেয়া হয় ভেড়ার পাল। সারাদিন ঘাস খেয়ে রাখালসহ ওদের ঘরে ফেরার দৃশ্য বলে দেয় কাকে বলে গোধূলি সন্ধ্যা, কাকে বলে গড্ডলিকাপ্রবাহ। ভেড়াপালন স্থানীয় লোকজনের অন্যতম আয়ের উৎস। চরের কোথাও কোথাও দেখা যায় মহিষের পাল। নানান রকম পাখির আনাগোনা বেড়ে যায় এসময়। গুলতি হাতে নিয়ে বের হয় গ্রামের দসু্য ছেলেরা। চরের কিছু কিছু অংশে বেড়িবাঁধের ঢালে চাষ হয় মৌসুমী সবজি। বিকালে বেড়িবাঁধের সারি সারি খেজুর গাছে হাঁড়ি বসিয়ে দেয় গাছিরা। সূর্য লাল আবির ছড়িয়ে ডুব দেয় পশ্চিমের বঙ্গোপসাগরে। শীত জেঁকে উঠলে রসের গন্ধে ম-ম করে চরাচর। শুকনো নাড়া জ্বালিয়ে গল্পে মেতে ওঠে চরের মানুষ। কোথায় কোথাও রান্না হয় রসের পায়েস।

শৌখিন ভ্রমণপিপাসুরা সন্দ্বীপের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসময় পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন নিয়ে ঘুরতে আসেন এখানে। অল্প দামে কিনতে পাওয়া যায় রাজহাঁস। স্কুল-কলেজ থেকে মাইক বাজিয়ে আসে পিকনিক বাস। ছেলেমেয়েদের কলকাকলিতে মুখর হয়ে ওঠে চরের প্রত্যেকটি ধূলিকণা, ঘাস।

মাঝে মাঝে অনেক বছর পর সাগরে সাতদিন সাঁতার কেটে একটা গাছের টুকরোকে আকড়ে ধরে কূলে এসে ভেড়ে অপরিচিত এক লোক।মাছে খাবলে খাওয়া শরীর।নাম বলতে পারেনা,ঠিকানা বলতে পারেনা।উৎসুক জনতার ভীড় জমে লোকটাকে ঘিরে।ঘন হয়ে আসে রাত।সে লোকের গল্প বছরের পর বছর ভেসে বেড়ায় সবুজ চরের বাতাসে।খুব নিরিবিলি একা একা কান পেতে থাকলে ফিসফিস সে গল্প শোনা যায় এখনও।

aijaidinbd.com/feature/rong-berong/76759/সন্দ্বীপের-সবুজ-চর 

সাজিদ মোহন
  ২৪ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০