Friday, June 25, 2021

বখতিয়ার খিলজির আমলে মুসলিমদের প্রাথমিক শিক্ষার ধরণ

মুসলিম সমাজের প্রতিটি শিশু চার বছর চার মাস চার দিন বয়সে উপনীত হলে তাকে সুন্দর পোশাকে সাজিয়ে পরিবারের সব সদস্য ও অন্য স্বজনদের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাথমিক জ্ঞান প্রদানের সূচনা করা হতো। শিশুটিকে পবিত্র কোরআনের কিছু অংশ পাঠ করানোর চেষ্টা করা হতো—শিশুটি পড়তে না চাইলে তাকে অন্তত ‘বিসমিল্লাহ’ উচ্চারণ করানোর প্রথা ছিল।
প্রাথমিক অবস্থায় জোর দেওয়া হতো বিশুদ্ধ উচ্চারণের দিকে। পরবর্তীকালে ধারাবাহিকভাবে মসনবি, পান্দনামাহ, আন্দনামাহ, গুলিস্তান, বোস্তান ইত্যাদি ফারসি শিক্ষার গ্রন্থ পাঠ শিক্ষার্থীর জন্য আবশ্যক ছিল। তা ছাড়া দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন ব্যাপার ফারসি ভাষায় প্রকাশ করতে শেখানো হতো। পাশাপাশি ছাত্রদের ইউসুফ-জোলেখা, লাইলি-মজনুর কাহিনি, সিকান্দারনামাহ, আলেকজান্ডারের বিজয়ের ইতিহাস ইত্যাদি অধ্যয়ন করানো হতো। প্রাথমিক পর্যায়ে একজন শিক্ষার্থী প্রথমে ফারসি নাম, পরে আরবি এবং তারপর অন্যান্য ভাষায় নাম লেখার অভ্যাস করত। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রদের ফারসি-আরবির পাশাপাশি বাংলা ভাষা শিক্ষার প্রচলন ছিল। বাংলা বহু মুসলমানের মাতৃভাষা ছিল বলে বাঙালি মুসলমানরা মাতৃভাষাকে অবহেলা করতে পারেনি। বহিরাগত মুসলমানরাও বাংলা ভাষা এবং এ দেশকে নিজের দেশ হিসেবে গ্রহণ করেছিল।

শেয়ার করুন

0 comments: