Tuesday, June 29, 2021

রাতের আকাশে গ্রীষ্মের ত্রিভুজ

রাতের আকাশে গ্রীষ্মের ত্রিভুজ

২৭ মে ২০২১ তারিখ রাত ২ টার পর মাথার উপর আকাশে সামার ট্রায়াঙ্গেল দেখলাম গ্রামের বাড়িতে । রাতটি ছিল পূর্নিমার পরের রাত । পূর্ণিমার পরের রাত হওয়ায় আকাশে আলোকোজ্জ্বল ছিল । উপরন্তু আকাশে মেঘের ভেলা থাকলেও আমাদের গ্রামের আকাশ বায়ুদূষণ ও আলোক দূষণমুক্ত হওয়ায় স্পষ্টভাবে সামার ট্রায়াঙ্গেল স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছিলো ।
সামার ট্রায়াঙ্গেলকে গ্রীষ্মের ত্রিভুজ বলা হয় । সামার ট্রায়াঙ্গেল হলো তিনটি নক্ষত্রের নকশা । নক্ষত্রগুলোর নাম হলো Vega, Altair এবং Deneb । এগুলোর বাংলা নাম হলো অভিজিৎ, শ্রবণা এবং পুচ্ছ । মে-জুন মাসে এসব নক্ষত্র থাকে মধ্য রাতে মাথার উপর । ফেব্রুয়ারী-মার্চ-এপ্রিল বা বসন্ত কালের দিকে থাকে ভোরের আকাশে । নভেম্বর মাসের দিকে এগুলো থাকে সন্ধ্যার পশ্চিম আকাশে । এসব নক্ষত্র চিনলে অনেকগুলো তারামন্ডল চেনা হয়ে যায় । কারণ এসব নক্ষত্র তিনটা তারামন্ডলের অংশ । আকাশের নক্ষত্রগুলো ৮৮ টা তারামন্ডলে বিভক্ত । তিনটা তারামন্ডল বীনা, ঈগল ও বক তারামন্ডলের অংশ । এসব তারামন্ডল চিনতে পারলে এসবের আশে পাশের তারামন্ডলগুলোও চেনা যায় । আমার নিবন্ধের এসব ছবি হতে সামার ট্রায়াঙ্গেল ও কিছু তারামন্ডল বা constellations চেনা সহায়ক হতে পারে ।

Monday, June 28, 2021

বারান্দা ও চিন্তার জগৎ

বারান্দা ও চিন্তার জগৎ

বারান্দায় সকালে দৈনিক পত্রিকা পড়া হোক, কিংবা বিকালে চা পান করাই হোক – বারান্দাটা হলো একটা গুরুত্বপূর্ণ স্হান ।
কারণ বারান্দায় অনেক কিছুই চোখে পরে যায় যেগুলো মনের জগতে আলোড়ন সৃষ্টি করে । মন চট করে নিজের শূন্যতায় একটা নতুন ছবি একে নেয় ।

Sunday, June 27, 2021

মানমন্দিরে আকাশ পর্যবেক্ষণ

মানমন্দিরে আকাশ পর্যবেক্ষণ

মানমন্দির (Observatory) হলো আকাশ পর্যবেক্ষণ এবং মহাকাশের বিভিন্নবস্তুর তথ্য সংগ্রহের জন্য বিশেষভাবে তৈরি যন্ত্রপাতিসমৃদ্ধ গবেষণাগার। জ্যোতির্বিজ্ঞান, জলবায়ুবিজ্ঞান, ভূতত্ত্ব, গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান ইত্যাদি বিষয়ের গবেষণার জন্যই সাধারণত মানমন্দির স্হাপন করা হয়ে থাকে। মানমন্দির কোন ধর্মস্হান ও পর্যটন কেন্দ্র নয় । মানমন্দির হলো বিজ্ঞানী ও গবেষকদের স্হান ।
মানমন্দির বানানোর জন্য নির্দিষ্ট কোন বিন্দু বা স্হানকে নির্বাচন করা হয় না । কারণ মানমন্দিরের প্রধান উদ্দেশ্য আকাশ পর্যবেক্ষণ ও আকাশ নিয়ে গবেষণা করা । মানমন্দির বানানো হয় জনবিরল স্হানে যেখানে আকাশ পরিস্কার থাকে, বায়ু দুষণ থাকে না, আলোক দূষণ হয় না, বায়ুতে আদ্রতা থাকে না, ধোয়া ও ধুলা-বালি থাকে না । যে কোন বিশ্ববিদ্যালয় বা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের গারো পাহাড় ও চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ী এলাকায় মানমন্দির বানাতে পারে । কারণ এসব এলাকায় মানমন্দির বানানোর যথাযথ পরিবেশ ও আবহাওয়া রয়েছে । আমরাও এমন ধরণের এলাকায় মানমন্দির বানাতে আগ্রহী । যারা এই মহত্ উদ্যোগের সাথে যুক্ত হতে চান তারা আমাদের সাথে যুক্ত হতে পারেন । Meade's LX600 12 টেলিস্কোপ হবে আমাদের প্রাথমিক পদক্ষেপ যা আমাদের এই মানমন্দিরে স্হান পাবে । আমাদের মানমন্দিরটার ডিজাইন হবে অনেকটা এই পোস্টের সাথে দেওয়া ছবির মতো । আমাদের মানমন্দিরের সাথে থাকবে – বাংলাদেশি ওয়াটার গার্ডেন, রিসোর্ট, বিজ্ঞান যাদুঘর, হার্বেরিয়াম, প্ল্যানেটেরিয়াম ও সমৃদ্ধ লাইব্রেরী । আমাদের এই প্রকল্প সমন্বিত সাইন্স টুরিজম ও রিচার্সের অংশ হিসেবে তৈরী করা হবে । https://www.facebook.com/bdaunion/

Saturday, June 26, 2021

বরগুনা দক্ষিণাঞ্চলের এক্সক্লুসিভ টুরিস্ট জোন

বরগুনা দক্ষিণাঞ্চলের এক্সক্লুসিভ টুরিস্ট জোন

বরগুনার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যভরা স্থানগুলোর সঙ্গে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুয়াকাটা, গলাচিপার সোনার চর ও সুন্দরবন মিলে গড়ে উঠতে পারে একটি এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন। বরগুনার তালতলী উপজেলার সোনাকাটায় রয়েছে ইকোপার্ক। এখানে ছোট-বড় ১২টি কিল্লা, ৭টি পুকুর রয়েছে। হরিণ বেষ্টনী, কুমির প্রজনন কেন্দ্র ও শুকর বেষ্টনীসহ একটি পিকনিক স্পট রয়েছে। ফকিরহাট বাজারের কাছাকাছি একটি ব্রিজের মাধ্যমে সোনাকাটা জঙ্গলে যাওয়া যায়। এটাই পর্যটকদের প্রবেশদ্বার। যোগাযোগ এবং থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা উন্নত হলে এটি হবে পর্যটনের চমৎকার স্থান।
সোনাকাটার পূর্বে কুয়াকাটা, পশ্চিমে সুন্দরবন ও হরিণবাড়িয়া, উত্তরে রাখাইন পল্লী এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর। সোনাকাটা থেকেও উপভোগ করা যায় সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত। বঙ্গোপসাগরের তীরঘেঁষা বরগুনা জেলাটি ভৌগলিকভাবে দক্ষিণ বাংলার পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যস্থলে অবস্থিত। বরগুনার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যভরা স্থানগুলোর সঙ্গে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার কুয়াকাটা, গলাচিপার সোনার চর ও সুন্দরবন মিলে গড়ে উঠতে পারে একটি এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন। বরগুনা জেলার পর্যটন স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো : সদর উপজেলার গোড়াপদ্মা, ছোনবুনিয়া, বাইনচটকির চর, খাকদোন নদীর মোহনা, তালতলীর রাখাইন পল্লী, আশারচরের সমুদ্র সৈকত, শুঁটকি পল্লী, সোনাকাটা, পাথরঘাটার লালদিয়ার চর। এছাড়া সুন্দরবনের কটকা, কচিখালী, ডিমের চর এবং দুবলার চর, কুয়াকাটা, সোনারচরসহ আরও কিছু স্থান বরগুনার একেবারে কাছে। কুয়াকাটা পটুয়াখালীর কলাপড়া উপজেলাতে অবস্থিত হলেও ভৌগোলিকভাবে ১৯৬৯ সালেও বরগুনা জেলার অন্তর্ভূক্ত ছিল। স্বাধীনতার পর কলাপাড়াকে পটুয়াখালীর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু সড়ক পথে বরগুনা থেকে কুয়াকাটার দুরত্ব পটুয়াখালীর তুলনায় কম। ফলে পর্যটকরা বরগুনা ভ্রমণের মধ্যে কুয়াকাটাকেও রাখতে পারেন। পাথরঘাটা উপজেলার সর্ব দক্ষিণে হরিণঘাটা চর। এ চরে রয়েছে হরিণ ও বন্য শুকর। রয়েছে দীর্ঘ সৈকত। সৈকতে দাড়িয়ে সূর্যাস্ত উপভোগ করা যায়। হরিণঘাটার গহীন ঝাউবনের নিচে বসে শুনতে পাবেন বাতাসের শো শো শব্দ। সমুদ্র দেখলে মনে হবে স্বপ্নের মাঝে রয়েছেন। রাতের আঁধারে হরিণের পাল এসে ঝাউবনের নিচে আশ্রয় নেয়। তাও দেখার মতো দৃশ্য। বরগুনার বেতাগী উপজেলায় রয়েছে মুঘল আমলের ঐতিহ্যবাহী বিবিচিনি শাহী মসজিদ। মূল ভূমি থেকে ৩০ ফুট উচ্চতায় স্থাপিত এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি নির্মাণ করেছেন আধ্যাত্মিক সাধক হযরত শাহ নেয়ামতুল্লাহ (র.)। ১৬৫৯ সালে পারস্য থেকে ইসলাম প্রচারের জন্য তিনি এ অঞ্চলে আসেন। সপ্তদশ শতাব্দীতে নির্মিত মসজিদটি দৈর্ঘ্যে ৩৩ ফুট ও প্রস্থে ৩৩ ফুট। দেয়াল ৬ ফুট চওড়া। সুন্দরবনের সব স্পটে যেতে হলে পুরো দিনটাই লঞ্চে ভ্রমণ করতে হবে। বরগুনা থেকে সুন্দরবন ভ্রমণ খুবই সহজ। সকালে গিয়ে বিকেলে বরগুনায় ফিরে আসা যায়। অথবা ২-৩ দিনের খাবার নিয়ে লঞ্চেও থাকা যায়। সুন্দরবনের কটকাসহ আশপাশের স্পটগুলো হলো কচিখালী, ডিমের চর ও দুবলার চর। ঝাঁক বাঁধা হরিণ ও বানরসহ ভাগ্য প্রসন্ন হলে দেখা যাবে রয়েল বেঙ্গল টাইগার। রাতে কটকার অভয়ারণ্যে ভিড় করে হরিণের পাল। কুয়াকাটাকে নতুন করে কাউকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটোই উপভোগ করা যায় এর সৈকতে। দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত, রাখাইন ঐতিহ্য, শুঁটকি পল্লী, ঝাউবন ও ইকোপার্কসহ নানা কারণেই কুয়াকাটা দেশের অন্যতম বৃহত্তম পর্যটন কেন্দ্র। কুয়াকাটা থেকে বরগুনার দূরত্ব অন্যান্য জেলার চেয়ে খুবই কম। তাই কুয়াকাটা ও বরগুনা মিলে একটি সমন্বিত পর্যটন এলাকা গড়ে উঠতে পারে। এছাড়াও বরগুনা সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে ভ্রমণ স্পট। গোড়াপদ্মায় গড়ে উঠেছে ছোট আকারের পর্যটন কেন্দ্র। বিকেলের অসংখ্য মানুষ এ সব স্থানে ভিড় করেন। বরগুনা শহর থেকে ৬ কিলোমিটার পশ্চিমে রয়েছে প্রাকৃতিক জঙ্গল। চারদিকে নদীবেষ্টিত ওই জঙ্গলে রয়েছে হরিণ। পিকনিকে জন্য এটি অপূর্ব সুন্দর স্পট। এ ছাড়া লবণগোলা, ছনবুনিয়া, কুমিরমারা ও বড়ইতলাসহ বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠা ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট পর্যটনের জন্য আকর্ষণীয় স্থান। একসঙ্গে অনেক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে বরগুনা একটি অসাধারণ জায়গা। তবে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করা গেলে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে অন্যান্য জায়গার তুলনায় বরগুনা কোনো অংশেই কম হবে না।এমন কি এই জেলাকে ঘিরে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে গড়ে উঠতে পারে একটি এক্সক্লুসিভ ট্যুরিস্ট জোন। উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ আর একই স্থানে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয়, দেখা যায় পটুয়াখালীর কুয়াকাটায়। আর কুয়াকাটার পশ্চিমে বরগুনার তালতলী উপজেলার সোনাকাটায় নির্জন গভীর অরণ্য। এখানে রয়েছে মায়াবী চিত্রা হরিণের পাশাপাশি মেছো বাঘ, কুমির,কাঠ বিড়ালিসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণী। এরপরই পাথরঘাটা উপজেলার লালদিয়া যেখানে রয়েছে ম্যানগ্রোভ বন। কাঠের পাটাতনের ব্রিজ ধরে গভীর বনে হারিয়ে যাওয়ার সুযোগ। শুধু ব্রিজ নয়, টাওয়ারে উঠে বা ছোট নৌকা ভাড়া করে বন দেখার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে এখানে। দক্ষিণে এ তিনটি পর্যটন কেন্দ্র পাশাপাশি হলেও দুটি নদী বিচ্ছিন্ন করেছে কেন্দ্রগুলোকে। আর একটি কেন্দ্র থেকে আরেকটিতে যাওয়ার নেই কোনো ব্যবস্থা। বিশখালী ও বলেশ্বর নদীর মোহনায় বঙ্গোপসাগরের উপকূলে এমন এক চমৎকার বন দাঁড়িয়ে আছে বরগুনার পাথরঘাটায়। হরিণঘাটার বন নামে পরিচিত এই বনে দিনদিন বেরে চলছে। ২০ হাজার একর জুড়ে দৃষ্টিনন্দন এই বনে প্রাকৃতিক কেওড়া, গেওয়াসহ সৃজিত সুন্দরী ও ঝাউবন। বন অধিদপ্তর ১৯৬৭ সালে হরিণঘাটা বন সম্প্রসারণে পরিকল্পিত বনায়ন শুরু করে। পরে ২০১৩ সালে এখানে ১০০ হেক্টর এলাকাজুড়ে সমৃদ্ধি কর্মসূচির আওতায় নতুন বন সৃজিত হয়। বনের ভেতরে পর্যটকদের পায়ে চলার জন্য তৈরি কর হয়েছিল (ফুট ট্রেইল) বা সেতু আর এই মায়ায়ই দর্শনার্থীদের টানছে এখানে। আর এই ফুট ট্রেইল এখন ভেঙ্গে নেই বললেই চলে। এখানে চলতে গেলে মৃত্যুর ঝুকি নিয়ে চলতে হয়। কারন, এই ফুট্রেইলের পায়ে চলার পথ নির্মাণের ফলে হরিণঘাটা বন আকর্ষণীয় পর্যটনের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। বনের ভেতর উঁচু পিলারে তৈরি করা হয়েছে চার তলা ওয়াচ টাওয়ার যার উপর দাড়িয়ে মানুষ নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দে বনের প্রাণ-প্রকৃতি ও সাগরতীর দর্শনের সুযোগ পাচ্ছে। বনের ভেতর নির্মাণ করা হয়েছে বিশ্রামাগার ও গোলঘর যেখানে পর্যটকরা বিশ্রাম নিতে পারে। এই বনের ভিতরের দৃশ্য দেখার জন্য ফুটট্রেইল নির্মান করার হয়েছে পর্যটকদের জন্য। হরিণঘাটা থেকে লালদিয়া সমুদ্রপাড় পর্যন্ত যেতে ৯৫০মিটার ফুট-ট্রে ব্রিজ, ৪টি পাকা গোলঘর, একটি ব্রিজ করা হয়েছে। ত্রিমুখী এই পর্যটন এলাকা সুন্দরবন ও কুয়াকাটার মাঝখানে। লালদিয়া, সোনাকাটা ও কুয়াকাটা নিয়ে সরকারের পর্যটন জোন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
১ কেজি সয়াবিন তেল সমান ১.০৯ লিটার

১ কেজি সয়াবিন তেল সমান ১.০৯ লিটার

সয়াবিন তেলের আপেক্ষিক গুরুত্ব হচ্ছে ০.৯১৭ । তার মানে ১ কেজি সয়াবিন তেল সমান ১/০.৯১৭ = ১.০৯০৫ লিটার । সহজ কথায়, ১ কেজি সয়াবিন তেল সমান ১.০৯ লিটার ।
এক লিটার সমান এক কেজি হবে এটা পুরোপুরি ভুল ধারণা। পৃথিবীর প্রতিটি পদার্থের ঘনত্ব বিভিন্ন। আবার একই পদার্থ ভিন্ন ভিন্ন উৎস থেকে সংগ্রহ করলেও ঘনত্বের পার্থক্য থাকবে। যার ফলে ওজনে ভিন্নতা আসতেই পারে। উদাহরণস্বরূপ হাইব্রিড জাতের গরুর এক লিটার দুধের ওজন আর দেশী গরুর এক লিটার দুধের ওজন একটু হলেও ভিন্নতা আসবে। নিচে কিছু পদার্থের এক লিটারে ওজন (আসলে ভর) কত আসে তা লিখে দিলাম। সবগুলোই সম্ভাব্য ওজন। 1 L চিনির সিরাপ = 320 গ্রাম = 0.3 Kg 1 L কোকাকোলা = 610 গ্রাম = 0.6 Kg 1 L পেট্রোল = 748 গ্রাম = 0.74 Kg 1 L অ্যালকোহল = 789 গ্রাম = 0.78 Kg 1 L কেরোসিন = 800 গ্রাম = 0.8 Kg 1 L সয়াবিন তেল = 917 গ্রাম = 0.9 Kg 1 L পাম/ভেজিটেবল তেল = 920 গ্রাম = 0.92 Kg 1 L পানি = 1004 গ্রাম = 1 Kg 1 L দুধ = 1030 গ্রাম = 1.03 Kg 1 L মধু = 1440 গ্রাম = 1.4 Kg 1 L অলিভ অয়েল = 2200 গ্রাম = 2.2 Kg 1 L পারদ = 135300 গ্রাম = 13.5 Kg সেকারণেই এক লিটার আইসক্রিম কিছুতেই এক কেজি হবে না। অনেক অনেক কম আসবে। আইসক্রিমের আসলে সুনির্দিষ্ট ওজন নেই। উপকরণ, ফ্লেভার, প্যাকেজিং ভেদে এক লিটার আইসক্রিম একেকটার ওজন একেক রকম। কোনটা এক লিটারে ৩০০ গ্রামের মতো আবার কোনটা এক লিটারে ৮০০ গ্রামের মতো আসবে। আইসক্রিমে চকোলেট, বিস্কুট, বাদামের আধিক্য বেশি থাকলে ওজনে কম আসতে পারে। এটা অস্বাভাবিক কিছুই না। এটাই পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র। কারণ চকোলেট, বিস্কুট, বাদাম পানির তুলনায় হালকা। পাঠ্যপুস্তকে এটা পাবেন চার ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এক লিটার বিশুদ্ধ পাতিত পানির ওজন এক কেজি। (সংগৃহীত)
পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার উপায় -১

পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার উপায় -১

“একটি বেস্ট প্র্যাকটিস, পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার উপায়” লিখেছেন : কাজি জহিরুল ইসলাম শনিবার সকালে ঘুম থেকে উঠে যখন মর্নিং ওয়াকে বেরুলাম তখন আমার রিভিয়েরার বাড়িকে (এখন আর আমি ওই বাড়িতে থাকি না) প্রদক্ষিণ করে ছুটে যাওয়া দুই কিলোমিটারের সার্কেলটি একেবারে অচেনা লাগছে । রাস্তায় একটাও ঝরাপাতা নেই, ফুটপাথের ভাঙা কংক্রিটের ফাক গলে গজিয়ে ওঠা ঘাসের ডগা নেই । পাইনের কিরিকিরি পাতার যে আস্তরণ রোজ সকালে মাড়িয়ে পা ফেলি সেখানে এখন ঝকঝকে পিচঢালা পথের কালো চিতানো বুক । পথের ওপর একটাও সিগেরেটের বাট নেই, আবর্জনায় নাক ডুবিয়ে পড়ে থাকা ছেঁড়া পলিথিনের ব্যাগ নেই, এমন কি পথের কোথাও সাত সকালে কে এসে অমন সাফ করে দিয়ে গেল? আমাদের সকল উদ্বেগ, উৎকন্ঠার অবসান ঘটলো আধ কিলোমিটার পথ পার হওয়ার পরেই । যেন একটা উৎসবে মেতে উঠেছে সার্কেলের দু পাশে বসাবসারত বাসা-বাড়ির ছ বছরের শিশু থেকে শুরু করে ২৩/২৪ বছর বয়েসী তরুণী/তরুণ । প্রত্যের হাতে ঝাঁটা, মোশেইদ (রামদা জাতীয় ধারালো অস্ত্র, মাথার দিকটা প্রায় তিন ইঞ্চি চ্যাপ্টা), ময়লা তোলার কোদাল, খুন্তি, দুই/তিন মিটার পর পর নীল রঙ্গের বালতির সারি । আর অপেক্ষাকৃকত বড়রা, ময়লাভর্তি ভ্যানগুলো ঠেলতে ঠেলতে নিয়ে যাচ্ছে একটা নির্দিষ্ট স্হানে । এক্তেদার সাহেব অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থেকে বল্লেন, ও তাহলে এই হলো ঘটনা ! হাঁ, এই হলো ঘটনা । ঘটনাটি আমি এজন্য লিখছি, এটিকে একটি বেস্ট প্র্যাকটিস হিসাবে চিহ্নিত করে আমি বাংলাদেশের মানুষকে জানাতে চাই ।
আজ আবিদজানের যে সব ছেলে-মেয়েরা নীল বালতি নিয়ে ভোর পাঁচটায় রাস্তায় নেমে এসেছে নিজের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য, তারা সবাই আমাদের মতোই তৃতীয় বিশ্বে বসবাসকারী স্কুল কলেজে পড়ুয়া ছেলে-মেয়ে । এটা ওদের দীর্ঘ দিনের প্র্যাকটিস । ফরাসীরা দীর্ঘ ঔপনিবেশকালে অন্য অনেক জিনিজের মতো পরিচ্ছন্নতাও যে একটি শৈল্পিক সৌন্দর্য এই বোধ ওদের মগজের মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে, যা ইংরেজ আমাদের শেখাতে পারেনি । এই পরিচ্ছন্নতা অভিযানটি ওরা চালায় মাসে একদিন, একটি নির্দিষ্ট শনিবারে । করো চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ নেই, অবসন্নতা নেই । সকলেই যেন একটি উৎসব আনন্দে উদ্দেপিত, উদ্বেলিত । যেন এক মহৎ কর্মযজ্ঞে শামিল হতে পেরে ধন্য সবাই । মুখে হাসি নিয়ে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা ভোরের ফুরফুরে হাওয়ার মতো উডে বেড়াচ্ছে । একটু যারা বড় তারা নিজেরা কাজ করার পাশাপাশি অন্যদের কাজ মনিটরও করছে । যদি কোন শিশু কাজ রেখে ধুলা বালি দিয়ে খেলতে নেমে গেল, তখন হাসি দিয়ে ওকে কাজে ফিরিয়ে আনছে । ফরাসী ভাষায় এমন কিছু বলছে, অনুমাণ করছি, আজকের এই কাজ করাটাই খেলা, এমন কিছু বুঝতে পেরে শিশুটি দৌড়ে এসে কাগজ কুড়াতে শুরু করে দিলো । পিচঢালা পথটি দুই কিলোমিটারের একটি বৃত্ত রচনা করে যেখান থেকে শুরু হয়েছিলো আবার ঠিক সেখানে এসেই শেষ হয়েছে । অথবা বলা যায় পথটি কেবল অনন্তকাল ধরে বৃত্তাকারে ঘুরছেই, শেষ খুঁজে পাচ্ছে না । পথের ডানদিকে অর্থাৎ বৃত্তের বাইরের অংশে প্রায় পঞ্চাশ মিটার ফাঁকা জায়গা, পিচঢালা পথটির সমান্তরাল ছুটে গেছে, যা ঘাসের ঘন অবণ্য আর মাঝে মাঝে আপন মনে বেড়ে ওঠা বনবট,বিশাল মোটা মোটা নিম, পান্হনিবাস, ভোগেনভেলিয়া, মাধবলতাসহ নানান প্রজাতির বৃক্ষলতায় শোভিত । তার পেছনেই সারি সারি হলুদ রঙের তিন তলা বাড়ি । এরই একটি বাড়িতে আমার বাসা । আর বাঁ দিকে, অর্থাৎ সার্কেলের ভেতরে একই দুরত্বে গড়ে উঠেছে বিশাল জায়গা জুড়ে একেকটি নয়নাভিরাম ভিলা । এক দল তরুণ অন্তহীন উৎসাহে মেশিন চালিয়ে দু’পাশের এই ফাঁকা জায়গায় গজানো ঘাসবন ট্রিম করছে । এক দল ফুটপাথের পাথরের ফাঁকে গজানো ঘাসের ডগা কেটে সাফ করছে, এক দল রাস্তা ঝাড়ু দিচ্ছে, এক দল কোদাল নিয়ে নীল বালতিতে পাথরের ধুলি কাদা, ছেড়া কাগজ, কয়লা আবর্জনা ঝরাপাতার স্তুল তুলে নিচ্ছে । ভ্যানগাড়িগুলো কাছে এগিয়ে আসতেই ময়লাভর্তি সারি সারি নীল বালতি তাতে উপুড় হয়ে যাচ্ছে । যেন একটা প্রশিক্ষিত চেইন ওয়ার্ক । পরিস্কার করতে করতে পুরো দলটি সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, পেছনে রেখে যাচ্ছে একটি ঝকঝরে পরিচ্ছন্ন পথ ও তার পরিবেশ । গত জুলাই মাসে যখন ঢাকায় যাই, তখন দেখলাম গুলশান এক নম্বরেরে সেই অতি পরিচিত সার্কেলটি আর নেই । ওখানে এখন লাইট ফাইট লাগিয়ে একটা জবরদস্ত চৌরাস্তা বানানো হয়েছে, যদিও এতে জানজট আরও বেড়েছে । সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য তারই দুপাশে ছোট দুইটি আইল্যান্ডে বাগান করা হয়েছে । খবররের কাগজ কিনতে যখন ডিসিসি মার্কেটে গেলাম তখন দেখি একটি ২৪ ২৪ বছরের যুবক সেই বাগান সাফ করছে । ওর সাফ করার ধরণ দেখে আমার খুব হাসি পেল । বাগান থেকে কুড়িয়ে এসে সে ছেড়া কাগজের টুকরাগুলি পথের ওপর ছড়িয়ে দিচ্ছে । ভাবলাম, ওকে দুটো কথা বলা আমার নাগরিক দায়িত্ব । এগিয়ে গিয়ে বললাম, তুমি যে কাগজের টুকরাগুলো পথের ওপর ফেলছো, এগুলোতো বাতাসে উড়ে আবার বাগানেই ফিরে যাবে । ও খুব বিরক্ত ভঙ্গিতে আমাকে বললো, তাইলে কি করুম, আমি বললাম, একটা ব্যাগ নাও । ময়লা, আবর্জনা, কাগজের টুকরা, সিগারেট বাট এইসব কুড়িয়ে ব্যাগে ভরো । তারপর নিকটস্হ কোনো ডাস্টবিনে নিয়ে ফেল । ও বললো, ব্যাগ পামু কই ? এ প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই । তবে আমি আশা করছি ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কাছে এর একটা সদুত্তর আছে । আবিদজানের এই ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের এতো গোছানো কাজ দেখে আমার কেবল গুলশানের সেই ছেলেটির কথাই মনে পড়ছে আর চোখের সামনে ভেসে উঠেছে ঢাকা শহরের, আমাদের বাড়ি ঘরের চারপাশের, আবর্জনাময় নোংরা পরিবেশের অসহায় চিত্রটি । আবিদজান, আইভরিকোস্ট ৩১ মার্চ ২০০৬

Friday, June 25, 2021

বখতিয়ার খিলজির আমলে মুসলিমদের প্রাথমিক শিক্ষার ধরণ

বখতিয়ার খিলজির আমলে মুসলিমদের প্রাথমিক শিক্ষার ধরণ

মুসলিম সমাজের প্রতিটি শিশু চার বছর চার মাস চার দিন বয়সে উপনীত হলে তাকে সুন্দর পোশাকে সাজিয়ে পরিবারের সব সদস্য ও অন্য স্বজনদের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রাথমিক জ্ঞান প্রদানের সূচনা করা হতো। শিশুটিকে পবিত্র কোরআনের কিছু অংশ পাঠ করানোর চেষ্টা করা হতো—শিশুটি পড়তে না চাইলে তাকে অন্তত ‘বিসমিল্লাহ’ উচ্চারণ করানোর প্রথা ছিল।
প্রাথমিক অবস্থায় জোর দেওয়া হতো বিশুদ্ধ উচ্চারণের দিকে। পরবর্তীকালে ধারাবাহিকভাবে মসনবি, পান্দনামাহ, আন্দনামাহ, গুলিস্তান, বোস্তান ইত্যাদি ফারসি শিক্ষার গ্রন্থ পাঠ শিক্ষার্থীর জন্য আবশ্যক ছিল। তা ছাড়া দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন ব্যাপার ফারসি ভাষায় প্রকাশ করতে শেখানো হতো। পাশাপাশি ছাত্রদের ইউসুফ-জোলেখা, লাইলি-মজনুর কাহিনি, সিকান্দারনামাহ, আলেকজান্ডারের বিজয়ের ইতিহাস ইত্যাদি অধ্যয়ন করানো হতো। প্রাথমিক পর্যায়ে একজন শিক্ষার্থী প্রথমে ফারসি নাম, পরে আরবি এবং তারপর অন্যান্য ভাষায় নাম লেখার অভ্যাস করত। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্রদের ফারসি-আরবির পাশাপাশি বাংলা ভাষা শিক্ষার প্রচলন ছিল। বাংলা বহু মুসলমানের মাতৃভাষা ছিল বলে বাঙালি মুসলমানরা মাতৃভাষাকে অবহেলা করতে পারেনি। বহিরাগত মুসলমানরাও বাংলা ভাষা এবং এ দেশকে নিজের দেশ হিসেবে গ্রহণ করেছিল।
বই লিখে আয়

বই লিখে আয়

একটি তথ্যভিত্তিক বই এর প্রকাশনায় যা খরচ হয় সাধারণত তার সমপরিমাণ লভ্যাংশ যোগ করে বিক্রয় করা হয়। ঢাকায় বই এর অনেক কাটতি রয়েছে এমন ৫০ এর অধিক দোকান খোঁজে পাওয়া যাবে (নিউ মার্কেট, নীলক্ষেত, শাহবাগ, পল্টন, গ্রিন রোড, ফার্মগেট, মৌচাক, মালিবাগ, উত্তরা, মিরপুর ১০, কমলাপুর, বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন, টঙ্গী, যাত্রাবাড়িসহ আরোও অনেক স্থানে একাধিক ভালো পরিমাণ বই বিক্রয়কারি ফুটপাতের বই বিক্রেতাদের প্রত্যেকে এককভাবে মাসে আপনার ১০টি বই বিক্রয় করে দিতে পারলে আপনার মাসিক আসবে ১০ টাকা করে হলেও ১০x১০x৫০=৫০,০০০ টাকা। দেশের সকল জেলা শহরের লাইব্রেরিসমূহ, রেলওয়ে স্টেশনের বই এর দোকানসমূহের কথা বাদই রাখলাম।
এবার আসুন প্রথম কথায়- বই লেখার সময় পাবেন কই??? ১ ঘন্টা সময় আপনার আগ্রহের বিষয়ের তথ্যানুসন্ধানে # গুগল # পাবলিক লাইব্রেরি # পুরনো পত্রিকা # সে বিষয়ের কয়েকজন বিশেষজ্ঞের সাথে সাক্ষাৎ # লেখা গোছানো- এ কাজগুলো করলে প্রতি তিন মাসে ৯০ ঘন্টা সময়ে কি একটি পছন্দের বিষয়ের অনেক তথ্যপূর্ণ একটি বই লেখা হয়ে উঠবে না? আরেকটা সহজ হিসেব : ৮০ পৃষ্ঠার বই লিখবেন যাতে প্রতি পৃষ্ঠায় ৩২০ শব্দ থাকলে মোট শব্দ হবে বইটাতে ২৫ হাজার ৬ শত । ২৫০ শব্দ প্রতি দিন লিখে বইটা ১০০ দিনে লিখে শেষ করতে পারবেন । ৫ বছরে আপনার ১০টি বই প্রকাশিত হলে আর তা থেকে মাসিক ৫ হাজার করে টাকা এলে আপনি কিন্তু মাসিক আয় করবেন ৫০ হাজার টাকা। আর লেখক হিসেবে সুনাম বলে কিছু তো রেখে গেলেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে । যা অন্য অনেক পূর্ণ সময় পেশাতেও সম্ভব না। ভাল একটা অনুপ্রেরণামূলক বই আপনাকে বাঁচিয়ে রাখতে কয়েক শতক । যত দিন আপনার বইয়ের আবেদন থাকবে । বিষয়ের আবেদন থাকবে ।
বই প্রকাশের খরচ

বই প্রকাশের খরচ

মুদ্রণ ও প্রকাশনা জগত্ সম্পর্কে যাদের ধারণা নেই তাদেরকে এ সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা দেওয়াই এই লেখার উদ্দেশ্য।
একটি বই প্রকাশ করতে হলে যথাক্রমে এই কাজগুলো করতে হয় : ১.কম্পোজ ২.প্রুফ রিডিং এবং সম্পাদনা ৩.অলঙ্করণ ও প্রচ্ছদ ডিজাইন মেকআপ ৪.পেস্টিং অথবা কম্পিউটারে ফর্মা সেটিং ৫.ট্রেসিং ও পজেটিভ ৬.প্রচ্ছদের পজেটিভ ৭.প্লেট তৈরি ৮.ইনার ও প্রচ্ছদের জন্য কাগজ ৯.ছাপা ১০.লেমিনেশন ১১.বাঁধাই। ১২. অন্যান্য ফর্মা কাকে বলে : একটি ডিমাই (২৩ ইঞ্চি–১৮ ইঞ্চি) বা ক্রাউন (২০ ইঞ্চি–১৫ ইঞ্চি) কাগজ মানেই এক ফর্মা। সাড়ে আট বাই সাড়ে পাঁচ ইঞ্চি (প্রায়) সাইজের বইয়ে ১৬ পৃষ্ঠায় এক ফর্মা আর বড় সাইজের বইয়ে ৮ পৃষ্ঠায় এক ফর্মা। ১৬ পৃষ্ঠায় ফর্মার বই করতে হলে ডাবল ডিমাই কাগজ এবং ৮ পৃষ্ঠার বইয়ে ডাবল ক্রাউন কাগজ ব্যবহার করা ভালো। এই সাইজ দুটো হল কমন সাইজ। আমাদের দেশের এবং বিদেশের প্রকাশকরা অবশ্য এর বাইরেও বিভিন্ন সাইজের বই বের করে। আমাদের দেশের মার্কেটে সাধারণত ডাবল ডিমাই এবং ডাবল ক্রাউন সাইজের কাগজ বেশি পাওয়া যায়। সেদিক দিয়ে একটা ডাবল কাগজের দুই দিক ছাপা মানে দুই ফর্মা। তার মানে একটা দশ ফর্মার বই ছাপতে আপনার দরকার হবে পাঁচটি ডাবল ডিমাই বা ডাবল ক্রাউন কাগজ। এভাবে ৫০০ বই করতে কতটি কাগজ দরকার তা আপনি সহজেই বের করতে পারবেন। বইয়ের ফর্মা সংখ্যার হেরফের হলেও হিসাব করতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এখন চটজলদি বের করে ফেলুন আপনার বইটি কয় ফর্মার হবে এবং কত শিট কাগজ আপনার দরকার। যত শিট কাগজ দরকার তাকে ৫০০ দিয়ে ভাগ করলেই আপনার রিমের হিসাবটি বের হয়ে আসবে। অর্থাত্ ৫০০ শিট=১ রিম। মনে রাখবেন, প্রিন্টিং ও বাইন্ডিংয়ের কয়েকটি পর্যায়ে যেহেতু অনেক কাগজ নষ্ট হয় তাই ৫০০ বই পেতে হলে আপনার কমপক্ষে আরও ৪০-৫০টি বইয়ের ম্যাটেরিয়াল বেশি দিতে হবে। বর্তমানে বাজারে ৮০ গ্রাম ডাবল ডিমাই বসুন্ধরা কাগজের মূল্য ২০০০ টাকা/রিম (প্রায়)। ডাবল ক্রাউন ১৪০০ টাকা/রিম (প্রায়)। এর চেয়ে বেশি এবং কম দামের কাগজ বাজারে আছে। ডিসেম্বরের দিকে কাগজের দাম সাধারণত বৃদ্ধি পায়। সাধারণ মানের বইয়ে ৬০ থেকে ৮০ গ্রাম কাগজ ব্যবহার হয়। গ্রাম হচ্ছে কাগজের পুরুত্বের হিসাব। প্লেট কী : প্লেট হচ্ছে অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি একটি মুদ্রণ অনুষঙ্গ। আপনার বইটি যদি ডাবল ডিমাই মেশিনে ছাপতে চান তবে বইটি যত ফর্মার হবে ততটি প্লেটের দরকার হবে। প্রতিটি প্লেটের মেকিং চার্জসহ দাম পড়বে ৩০০ টাকার মতো। তবে সময়ভেদে গত বছর ৬০০ টাকা পর্যনন্ত দাম ওঠে। প্লেট করার আগে আপনার লেখাগুলোকে ট্রেসিং বা পজেটিভ আকারে বের করতে হবে। বইয়ের মেকআপ করা থাকলে প্রতিটি ট্রেসিং নিতে খরচ পড়বে ১৫ টাকা। এক ফর্মায় ৮টি ট্রেসিং লাগে। আউটপুট নিতে হলে প্রতি বর্গইঞ্চি/প্রতি কালারের জন্য দরকার হবে ৫০ থেকে ৬০ পয়সা। পজিটিভ করতে হলে ফর্মা সেটিং আগে করে নিতে হবে। তবে বাংলা পজেটিভ করতে ফন্টের সমস্যার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কভার সাধারণত ছাপা হয় ডিমাই মেশিনে। প্রতিটি ডিমাই প্লেটের জন্য খরচ পড়বে ১৫০ টাকার মতো। উভয় ক্ষেত্রেই প্রতি কালারের জন্য একটি প্লেট ব্যবহার করতে হবে। তার মানে আপনার বইটির ভেতরের অংশ যদি এক কালারে ছাপা হয় তবে তার জন্য প্রতি ফর্মায় একটি প্লেট, যদি দুই কালারে ছাপা হয় তাহলে প্রতি ফর্মার জন্য দুটি প্লেট আর যদি চার কালারে ছাপা হয় তবে প্রতি ফর্মার জন্য চারটি প্লেট দরকার হবে। বইয়ের প্রচ্ছদ সাধারণত চার কালারে ছাপা হয়, তাই এর জন্য চারটি ডিমাই সাইজের প্লেট দরকার হবে। প্রচ্ছদ : বই বের করতে হলে প্রচ্ছদের দিকে বিশেষ খেয়াল দেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে প্রচ্ছদশিল্পী থেকে শুরু করে সব কাজেই প্রফেশনালদের ব্যবহার করতে হবে। মনে রাখা উচিত, প্রিন্টিং টেকনোলজি বেশ জটিল। তাই এ কাজে যে-ই জড়িত হবে সে যেন প্রিন্টিংয়ের এ টু জেড অবগত থাকে। আর বইয়ের মূল আকর্ষণই হচ্ছে প্রচ্ছদ এ কথা তো আমরা জানিই। বড় বড় আর্টিস্টরা একটি প্রচ্ছদের জন্য বিভিন্ন রকম পারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন। তবে প্রচলিত মানের একজন প্রচ্ছদশিল্পীর একটি কাজের পারিশ্রমিক আড়াই হাজার টাকার মতো। ইলাস্ট্রেশনের খরচ নির্ভর করে ভেতরে কী পরিমাণ কাজ থাকবে তার ওপর। প্রুফ রিডিং এবং সম্পাদনা : বই প্রকাশের ক্ষেত্রে সম্পাদনা একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। কিন্তু আমাদের দেশে এই পেশায় যোগ্য লোক নেই বললেই চলে। তবু আপনার প্রকাশনাটি মানসম্পন্ন করতে চাইলে একজন যোগ্য সম্পাদক খুঁজে বের করা উচিত। সাধারণ মানের লেখকরা ধারণাই করতে পারেন না তার লেখাটিতে কত ধরনের খুঁত থেকে যায়। একজন ভালো সম্পাদক সেগুলো দূর করতে পারেন। তবে হতাশার কথা এই যে, আমাদের দেশে বই প্রকাশের ক্ষেত্রে প্রায় কারওই সম্পাদনার ওপর কোনো বাজেট থাকে না। তবে প্রুফ রিডাররা আছেন। তারা টুকটাক ভুলভাল যে ধরেন তাতেও বইয়ের মান কিছুটা বজায় থাকে। মনে রাখা দরকার, আপনি যা জানেন তার মধ্যে কতটুকু ত্রুটি আছে সে ব্যাপারে আপনার মোটেই ধারণা নেই। যদি থাকত তবে আপনি ভুল লিখতেন না। বই প্রকাশের পরে তাতে যে কোনো ধরনের ভুল থাকাটা কতটা হাস্যকর তারা মোটেই জানেন না যারা ব্যাপারটাকে উপেক্ষা করেন। কয়েকদিন আগে এক বইমেলায় একটি বইয়ের নাম দেখলাম, ‘লেলিন….’। বুঝতেই পারছেন যারা লেনিনের নামটি ঠিকমতো জানেন না, তারা লেনিন সম্পর্কে কী বই বের করবেন। আর একজন বিজ্ঞ পাঠক যখন বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এ ধরনের ভুল দেখবেন তখন ওই বই হাতে নিয়েও দেখবেন না। তাই এই ব্যাপারটিতেও আপনাকে নজর দিতে হবে। এবারে আমরা একটা বই প্রকাশের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য হিসাব করব। এই হিসাব চূড়ান্ত কোনো হিসাব নয়। এর চেয়ে কম অথবা বেশি বাজেটেও এ ধরনের একটা বই প্রকাশ সম্ভব হতে পারে। এটা নির্ভর করে আপনি কতটা কোয়ালিটি মেইনটেইন করবেন তার ওপর। নমুনা হিসাব বইয়ের সাইজ : ৫ ফর্মা (৮০ পৃষ্ঠা) কাগজ : ৮০ গ্রাম বসুন্ধরা ভেতরের ছাপা এক কালার কভার চার কালার, লেমিনেশন ও বোর্ড বাঁধাই সংখ্যা : ৫০০ কপি ১. কম্পোজ ও ইলাস্ট্রেশন.. ১০০০ ( লেখক নিজে কম্পিউটারে কম্পোজ করবে বলে খরচ কম হলো ) ২.প্রুফ রিডিং ………………… ২০০০ ৩.প্রচ্ছদ ডিজাইন …. ২৫০০ ৪.পেস্টিং …………………….. ৫০০ ৫.মেকআপ ও ট্রেসিং ………….. ২০০০ ৬.প্রচ্ছদের পজেটিভ ……………… ৫০০ ৭.ডাবল ডিমাই প্লেট ৫টি … ১৫০০ ডিমাই প্লেট ৪টা ………………. ৬০০ ৮.কাগজ ২ রিম ১৫ দিস্তা … ৫৫০০ আর্টপেপার ১২০ গ্রাম ৮ দিস্তা ১৫০০ ৭০ গ্রাম জ্যাকেট পেপার ৪ দিস্তা৪০০ পোস্তানির কাগজ ………………. ৯০০ ৯.ছাপা ৫ প্লেট ………………… ২০০০ প্রচ্ছদ ছাপা …………………. ১৬০০ পোস্তানি প্রিন্ট ………………….. ৫০০ ১০.লেমিনেশন ……………………. ৭০০ ১১.বাঁধাই ………………. ........ ৭৫০০ ১২.অন্যান্য ……………………… ৫০০০ (যাতায়াত ও বিপনন) বিষয়টির প্রতি অনেকের আগ্রহের কারণে এই পোস্টটি দেওয়া হল। এই নমুনা হিসাবের সাথে আপনার বইয়ের সাইজ হিসাব করে বের করে নিন আপনার বইটি ছাপাতে কত টাকা খরচ হতে পারে। এ ব্যাপারে যে কোনো প্রশ্ন থাকলে এই পোস্টে আলাপ করতে পারেন। সবাইকে শুভেচ্ছা।

Thursday, June 24, 2021

লড়াই করো - মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যেয়ো না ।

লড়াই করো - মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যেয়ো না ।

শক্তি রেখে চলে তারা কখনো হারে না । ব্যর্থতা একটা পরীক্ষা মাত্র – স্বীকার করো । কী ঘাটতি রয়েছে – দেখো, পূরণ করো যতক্ষণ না সফল হও । শান্তির ঘুম ত্যাগ করো । লড়াই করো – মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যেয়ো না । কিছু না করলে জয়ধ্বনি শোনা যায় না । যে শক্তি রেখে চলে সে হারে না কখনো ।