Sunday, January 26, 2020

১০০ দিনে বই লেখার সহজ ৪ টি উপায়


বই লিখতে চান? কিন্তু আর হয়ে উঠছে না? ১০০ দিনে বই লেখার সহজ ৪ টি উপায়

লেখকঃ ব্রাডন টারনার
মানুষের বিভিন্ন ইচ্ছার মধ্যে কারো কারো বই লেখার স্বপ্ন থাকে। অনেকের কাছেই বই লেখা একটি বিশাল যজ্ঞ বা রকেট চালানোর মত দুরূহ কাজ। কিন্তু আমি এটা পেরেছি। গত সোমবার আমার বই Two new books on investing in rental properties প্রকাশিত হয়েছে যেটি আমি ১০০ দিনের মধ্যে লিখেছি- ফলাফল ২২০,০০০ শব্দ যার মধ্যে ১৬০,০০০ আমার নিজের বাকী ৬০,০০০ আমার অসাধারণ স্ত্রী হেথারের।
আমি কোনো পেশাদার লেখক নই। আমি শুধু একটি সহজ পন্থা অবলম্বন করেছি। আপনারা ও এই সহজ ৪ টি ধাপ অবলম্বন করে ১০০ দিনের মধ্যে নিজের বই লিখতে পারবেন।
প্রথম ধাপঃ আর্নল্ড এর মত প্রতিজ্ঞাবদ্ধ
আপনারা কী আর্নল্ড শোয়ারজেনেগার এর পুরনো ভিডিও গুলো দেখেছেন? তিনি যা ই করেছেন প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন বলেই পেরেছেন। আমরা কোনো কিছু পাবার আগে সেটা কতটা চাই তা গুরুত্বপূর্ণ নয়, গুরুত্বপূর্ণ তা পাবার জন্য কী করছি। এই ব্যাপারে আমার প্রিয় মাইকেল জর্ডান এর একটি উক্তি হল, “কিছু মানুষ চায় এটা হউক, কিছু মানুষ প্রার্থনা করে যেন এটা হয়, আর কিছু মানুষ এটা করে দেখায়”।
দ্বিতীয় ধাপঃ শব্দ সংখ্যা ঠিক করে নেয়া
আপনার বইয়ে কতগুলো শব্দ থাকবে?
সাধারণত বইয়ে ৬০,০০০ থেকে ১০০,০০০ এর মত শব্দ থাকে। আপনার নির্ধারিত সংখ্যা যাই হউক সেটাকে ১০০ দিয়ে ভাগ করুন যাতে করে প্রতিদিন কতটুকু লিখতে হবে তার ধারণা পাওয়া যায়। সেই সংখ্যাই হবে আপনার জন্য ন্যুনতম। যেমনঃ আপনি যদি ১০০,০০০ শব্দ লিখতে চান তাহলে প্রতিদিন আপনাকে ১,০০০ টি শব্দ লিখতে হবে। শুধু সংখ্যা নির্ধারণ করলেই হবে না আপনি কী লিখবেন তা নিয়ে চিন্তা ও করতে হবে।
তৃতীয় ধাপঃ MapQuest এর মত সীমারেখা তৈরি করা
আপনি আপনার বইয়ের জন্য শব্দের সীমা ঠিক করে ফেলেছেন এখন হল মূল কাজ হল বর্ণনার একটি অসাধারণ সীমারেখা তৈরি করা। অনেকেই সীমারেখার ব্যাপারটা জানেন কিন্তু আমি আরেকটু গভীরে বলতে চাই। আমি চাই আপনারা আগের দিনের স্কুলের MapQuest এর মত একটি সীমারেখা তৈরী করেন। আগের দিনে যখন স্মার্টফোন ছিল না তখন কোনো পার্টিতে যাবার জন্য আপনি কী করতেন? আপনার বাবার কম্পিউটার থেকে MapQuest থেকে ধাপে ধাপে ১৩ পৃষ্ঠার দিক নির্দেশনা প্রিন্ট করে নিতেন যাতে করে আপনি হারিয়ে না যান।
যখনই আমি বই লেখার সিদ্ধান্ত নেই তখন থেকে আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে Starbucks এ যেতাম, হুইপড ক্রিম দেয়া হট চকলেট এর স্বাদ নিতাম এবং আমার লেখা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফিরতাম না।
সব শেষে আমি ১০০ টি সাব-চ্যাপ্টার লিখেছিলাম। যেহেতু আমি জানতাম যে আমাকে ১০০ দিনে বইটি শেষ করতে হবে তাই প্রতি দিন আমাকে কমপক্ষে একটি সাব-চ্যাপ্টার লিখতে হবে যাতে ১,০০০ টি শব্দ থাকবে। এভাবেই আমি ধীরে ধীরে ১০০ দিনে ১০,০০০ শব্দের বইটি লিখতে পেরেছিলাম যা আমার কাছে আর কঠিন মনে হয় নি।
আপনার যদি সীমারেখা তৈরি করা হয়ে থাকে তবে মনে করুন কঠিন কাজ শেষ। এখন যা কাজ বাকী তাতে সময় লাগবে ঠিকই কিন্তু তা অনেক সহজ।
চতুর্থ ধাপঃ কোনো অজুহাত ছাড়া প্রতিদিন লেখা
যত সমস্যাই হোক না কেন প্রতিদিন লিখতে হবে। হউক সেদিন আপনার জন্মদিন কিংবা আপনি খুব অসুস্থ। এতে করে আপনি বুঝতে পারবেন আপনি কী লিখতে যাচ্ছেন। আপনার লেখা শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাতে ঘুমাতে যাবেন না। এক্ষেত্রে আমি আগের চেয়ে এক ঘন্টা আগে ঘুম থেকে উঠার কথা বলব এবং আপনি তা পারবেন। এই ব্যাপারে কিছু টিপস হলঃ
কাজের সাথে লেগে থাকাঃ
আপনাকে মনে রাখতে হবে আপনি ইতিমধ্যে ১০ ঘন্টা পার করে ফেলেছেন। আপনি যদি সব কিছু নির্ধারণ করে থাকেন তবে আপনাকে লেখা নিয়ে ভয় পেতে হবে না। এতে করে আপনার লেখা নিজ গতিতেই এগিয়ে যাবে।
মনে মনে ঠিক করে নেয়াঃ
এখন আপনি আর বই লিখছেন না আপনি সাব-চ্যাপ্টার লিখছেন। আমি প্রতিদিন ব্লগ পোষ্টের মত করে লিখতাম। আপনাকে ১০০ দিনের লেখা ভাগ করে নিতে হবে।
কোনো একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তির জন্য লেখাঃ
আপনার ফেইসবুকে এ যান এবং এমন একজন বন্ধু খুঁজে বের করুন যে নিশ্চিতভাবে আপনার লেখা পড়বে। এখন তার ফেইসবুক থেকে তার ৮.৫/১১ ইঞ্চির একটি ছবি প্রিন্ট করে আপনার দেয়ালে টানিয়ে রাখুন। আপনি মনে করবেন যে আপনি কোনো বই লিখছেন না, আপনার বন্ধুর কাছে কোনো কাহিনী বা বিষয় বর্ণনা করছেন। এটি করে দেখবেন সব কিছু কতটা বদলে যায়।
বই লেখা অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার আমি এটা অস্বীকার করব না। কিন্তু এটা অসম্ভব ও না। উপরের ধাপগুলো যদি মেনে চলেন তবে সহজেই আপনি আপনার বই লিখতে পারবেন।
1




শেয়ার করুন

0 comments: